Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp

২০১০ সালের বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর ব্রাজিল দলে যখন নেইমারের অভিষেক হয় তখন সে ১৮-এর গন্ডি অতিক্রম না করা এক তরুণ। যদিও সেই সময় থেকেই বিশ্বমঞ্চে সেরা দলটার দায়িত্বটা এসে পরেছে নেইমারের কাঁধে এবং এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি সেই দায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছেন। এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত নেইমার সফল হবেন কিনা তার উত্তর সময়ের হাতে তোলা থাকলেও এই দলটা যে এখনো যেকোনো টুর্নামেন্টে হট ফেভারিটের তকমা নিয়ে হাজির হয় তার সবচেয়ে বড় কারণ নেইমার জুনিয়র। তিনি যেনো মুকুটহীন রাজা!

নেইমারের অভিষেকের পর দলে অনেক প্রতিভাবানের আগমণ ঘটেছে, আবার সময়ের পরিক্রমায় তারা হারিয়েও গেছে কিন্তু নেইমার ব্রাজিল দলটা দাঁড়িয়ে রইলেন চীনেরপ্রাচীর হয়ে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলের সাথে যোগ হয়েছে নেইমারের ভয়াবহ ইনজুরি প্রবণতা, যার ফলে বলার মতো বড় কোনো সাফল্য আপাতত নেই নেইমার জুনিয়রের আন্তজার্তিক ক্যারিয়ারে। “নেইমার যুগে” ব্রাজিল দুইটি বিশ্বকাপ খেলেও পায়নি সাফল্য, একাধিকবার কোপা আমেরিকায় আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জিতেছে একবার এবং নেইমারের আক্ষেপ আরো বাড়িয়ে দিতে সেবারই হানা দিয়েছিলো ইনজুরি। তাই বলা যেতেই পারে, কনফেডারেশন কাপজয়ী নেইমারের আর্ন্তজাতিক ক্যারিয়ারটা বড্ড বেশি রঙহীন!

অথচ এই দলটার জন্য কি করেননি নেইমার? যে দলটার জার্সি সবচেয়ে বেশি কিংবদন্তির জন্ম দিয়েছে সেই দলটার সবচেয়ে খারাপ সময়ে এসেও গোলের বিচারে সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার দারপ্রান্তে নেইমার, গোল করানোর হিসেবে তো পুরো লাতিন আমেরিকারই সেরার খেতাব তা দখলে! তাহলে কেন আসেনি বড় সাফল্য? বড় সাফল্য আসেনি কারণ দলটা যে শুধু নেইমারের না, দলটা তো স্কোয়াডে থাকা আরো ২২ জনের এবং প্রতিবারই নির্দিষ্ট কোনো না কোনো জায়গায় সমস্যা নিয়েই ব্রাজিলকে খেলতে হয়েছে বড় টুর্নামেন্ট। এই যেমন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ছিলো না কোনো অভিজ্ঞ ফিনিশার, সর্বশেষ কোপা আমেরিকায় হারের কারণ হতে পারে একজন প্রোপার রাইট উয়িংগার না থাকা। এটা খেলোয়াড়দের ব্যর্থতা নাকি কোচের দল বাছাইয়ে ব্যর্থতা সেই প্রসঙ্গে না গিয়ে ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও শোনালেন আশার বাণী, জানালেন তরুণ একটা আক্রমণভাগ নিয়ে গেলেও এইটা নেইমারের ক্যারিয়ারে পাওয়া সেরা দল! বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রোনালদো নাজারিও বলেন, “নেইমারের উপর অবশ্যই অনেক বেশি চাপ থাকবে তবে এবার নেইমারের উপর থেকে চাপ সরিয়ে দিতে একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে এবং এটি নেইমারের পাওয়া ক্যারিয়ারের সেরা দল কেননা সবাই দুর্দান্ত ফর্মে আছে। আমি বিশ্বাস করি ভিনিসিয়াসরা ম্যাচের ভাগ্য পরিবর্তন করার সক্ষমতা রাখে।”

রোনালদো নাজারিওর আগে এই কথা অবশ্য নেইমার নিজেও বলেছিলেন। তবে ব্রাজিল ভক্তদের বড় একটি অংশ মনে করে তিতের দল বাছাইয়ে কিছুটা অসামঞ্জস্যতা থেকে যায়, যার ফলে ব্রাজিলকে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হয় বড় মঞ্চে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বিতর্ক এড়াতে ৫৫ জনের তালিকা ফিফার কাছে দেননি তিনি, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সরাসরি ২৬ জনের নাম ঘোষণা করবেন দীর্ঘদিন ধরে ব্রাজিলের হট সিটে থাকা এই কোচ। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে সর্বশেষ ম্যাচগুলোতে যারা খেলেছেন তাদের মধ্যে থেকেও বাদ পরতে পারেন অনেকে, আবার চমক হিসেবে থাকতে পারে কিছু নাম। চূড়ান্ত দল ঘোষণার আগে আরেকবার ইউরোপ ভ্রমণে আসবেন তিতে এবং তার সহকর্মীরা, দেখবেন ব্রাজিলিয়ানদের খেলা। হয়তো পূর্বের ভুলের পুনরাবৃত্তি আর করতে চাইছেন না ব্রাজিল বস!

শেয়ার করুন

আরো পড়ুন

ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ আসর চ্যাম্পিয়নস লিগ মানেই তারায় তারায় টক্কর, সেই তারার লড়াই যদি হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি […]

Scroll to Top