ফুটবল দুনিয়ার দুই প্রতিভাবান ফুটবলার নেইমারকে ২০১৭ সালে এবং এমবাপ্পেকে ২০১৮ সালে দলে টেনে এক প্রকার চমক দেখিয়েছিলো ফরাসি ক্লাব পিএসজি। পরবর্তীতে আরো কিছু তারকা এলেও গত মৌসুমে বার্সেলোনা থেকে মেসিকে এনে ফুটবল দুনিয়ায় সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমণভাগ গড়ে ছিলো ফ্রান্সের রাজধানীর ক্লাবটি। তবে এই মূহুর্তে যে গুঞ্জনগুলো শোনা যাচ্ছে তাতে আগামী মৌসুমে এই তিন তারকাই ক্লাব ছাড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে পিএসজিতে আসা নেইমার প্যারিসের জার্সিতে ফাইনাল খেললেও এখনো মেটাতে পারেননি পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লীগ ট্রফি জয়ের আক্ষেপ। মাঝে নিজেই পিএসজি ছেড়ে বার্সেলোনায় আসতে চাওয়া ক্লাব ভক্তদের সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল এই ব্রাজিলিয়ান তারকার। তবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেই সময় তাকে আর ছাড়েনি পিএসজি। অতঃপর, গত মৌসুমটা ভালো না যাওয়ায় নেইমারকে ছেড়ে দিতেও চেয়েছিল পিএসজি বলে গুঞ্জন শোনা যায় এবং সেই গুঞ্জনের উপর ভিত্তি করেই নেইমারকে কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলো ইংলিশ ক্লাব চেলসি। ট্রান্সফার মার্কেটের শেষ দিনে ৮০ মিলিয়ন ইউরোর একটা প্রস্তাবও তারা রেখেছিল পিএসজির কাছে, যদিও পিএসজি তাতে সাড়া দেয়নি। এই খবর পুরাতন হয়নি খুব একটা, এর মধ্যেই বোমা ফাঁটিয়েছে টিএনটি স্পোর্টসের ব্রাজিল শাখা। তারা দাবি করেছে চেলসির কোচ পরিবর্তন হলেও তারা এখনো নেইমারকে চায় এবং সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মৌসুমে তারা নেইমারের জন্য বড় অংকের বাজেট রেখেই মাঠে নামবে। একবার ফেরত গেলেও চেলসির নতুন মালিক মনে করছেন বিশ্বকাপের জন্যই নেইমার দল পরিবর্তন করেননি এবং বিশ্বকাপের পর নেইমারকে দলে ভেড়ানো সম্ভব হবে। যদিও এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য জানায়নি ফ্রান্সের কোনো গণমাধ্যম।
নেইমারকে নিয়ে যেমন নাটক কম হয়নি, তেমনি এমবাপ্পেকে নিয়েও নাটক নেইমারের চেয়ে কম হয়নি। রিয়াল মাদ্রিদে আসি আসি করে শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন পিএসজির সাথে। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর তিন মাসের মাথাই এ এলো নতুন গুঞ্জন। পিএসজির সাথে নাকি সম্পর্কটা ভালো নেই এমবাপ্পের! এই সংবাদে রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরা একটু নড়েচড়ে বসলেও সেই সম্ভাবনা আপাতত উড়িয়ে দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট পেরেজ। তাহলে কোথায় যেতে পারেন এমবাপ্পে? এখানে আবার বোমাটা মেরেছেন এমবাপ্পের চাচা। ফরাসি গণমাধ্যম এল প্যারিসকে এমবাপ্পের চাচা জানিয়েছেন লিভারপুলের মালিকের সাথে এমবাপ্পের পরিবারের সম্পর্ক ভালো এবং আগামী মৌসুমে তারা এমবাপ্পেকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পনা সাজাতে চাইছে যাতে সবুজ সিগনাল দিয়েছেন এমবাপ্পে!
নেইমার-এমবাপ্পেকে নিয়ে চলতে থাকা নাটকে বাদ কেন যাবে মেসির নাম? বার্সেলোনার বর্তমান বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যই নাকি বুঝতে পেরেছেন এই খারাপ অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য তাদের মেসিকেই প্রয়োজন। তাই আগামী মৌসুমে তারা মেসিকে ভাগিয়ে আনতে চায় পিএসজি থেকে। এক্ষেত্রে অবশ্য মেসির চাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ কারণ নেইমার-এমবাপ্পেদের মতো পিএসজির সাথে মেসির চুক্তির মেয়াদ বেশি দিনের না, আগামী মৌসুমেই শেষ হয়ে যাচ্ছে মেসির সাথে পিএসজির চুক্তি এবং মেসি চাইলে ফ্রী এজেন্ট হিসেবেই চলে আসতে পারবেন বার্সেলোনায়। যদিও পিএসজি তাকে ধরে রাখতে ইতিমধ্যেই নতুন চুক্তির প্রস্তাব পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে বার্সেলোনা মেসির মূর্তি ন্যু ক্যাম্পের সামনে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মূর্তি স্থাপনের বিষয়টি মেসির প্রতি সম্মান তো বটেই, মেসির মন নতুন করে জয় করার চেষ্টারও একটি অংশ বলে ধারণা করছে ফুটবল প্রেমিরা। তবে মেসি জানিয়েছেন বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত তিনি নিবেন না।
যদি আগামী মৌসুমে এই তিন তারকার যেকোনো একজন বা দুইজন কিংবা তিনজনকেই হারায় তাহলে তাদের বিকল্প হিসেবে কাদের চাইছে পিএসজি? সেই তালিকাও নাকি করা আছে ফরাসি জায়েন্টদের! এমবাপ্পের বিকল্প হিসেবে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাওটারো মার্টিনেজকেই নাকি প্রথম পছন্দ পিএসজির, নেইমারের বিকল্প হিসেবে তারা চায় পর্তুগিজ তারকা জোয়া ফ্লিক্সকে এবং মেসির বিকল্প হিসেবে তাদের পছন্দে তালিকায় আছে আরেক পর্তুগিজ তরুণ ফুটবলার রাফায়েল লিয়াও!