২০২২/২৩ মৌসুমটা যেনো কিছুতেই লিভারপুলের পক্ষে যাচ্ছে না। একের পর এক ইনজুরি যেমন তাদেরকে কাবু করছে তেমনি দলের পারফরম্যান্সও হচ্ছে যাচ্ছে-তাই। অল রেডদের মাঠের পারফরম্যান্স দেখে বোঝার উপায় নাই এই দলটাই গত মৌসুমে মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে হয়েছে লীগ শিরোপা বঞ্চিত, খেলে এসেছে চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনাল!
খারাপ সময়টা যে স্থায়ী নয় সেটা ভালো করে সবাই জানে এবং খারাপ সময়কে পেছনে ফেলার আভাস অবশ্য লিভারপুল দিয়েছিল দারুণভাবে। উড়তে থাকা ম্যানসিটিকে মাটিতে নামিয়ে আনার সুখস্মৃতি এখনো টাটকা সালাহ ফিরমিনোদের, তার আগে চ্যাম্পিয়নস লীগের ম্যাচেও তারা রেঞ্জার্সের বিপক্ষে পেয়েছে ৭-১ গোলের বিশাল জয়। সালাহ-ফিরমিনো-নুনেজরা বের হতে শুরু করেছিলেন খোলস ছেড়ে। তবে ক্লপের কপালে সেই সুখ আর বেশিদিন টিকলো কই? ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে যে নটিংহ্যাম ফরেস্ট ছিলো পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে, তাদের কাছেই কিনা হেরে বসলো আগের তিন ম্যাচে জেতা লিভারপুল এবং এটি এই মৌসুমে নটিংহ্যাম ফরেস্টের মাত্র ২য় জয়, সাথে লিভারপুলকে দেখতে হলো লিগে ৩য় হারের মুখ!
ফুটবলে অঘটন নতুন কিছু নয়, তবে নটিংহ্যামের এই জয়কে কোনোভাবে অঘটন বলার সুযোগ নেই কেননা নিজেদের মাঠে তারা লিভারপুলের বিপক্ষে যেভাবে পারফর্ম করেছে তাতে তিন পয়েন্ট পাওয়ার যোগ্য দাবিদার হিসেবে তার ম্যাচ নিজেদের পকেটে ভরেছে। লিভারপুল গোলকিপার এলিশন যদি দুর্দান্ত কিছু সেইভ না দিতেন তাহলে অল রেডদের হারের ব্যবধানটা হয়তো আরো বড় হলেও হতে পারতো। যদিও সালাহরা ম্যাচে ফেরার কম চেষ্টা করেনি কিন্তু তাদের সামনে চীনেরপ্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন নটিংহ্যাম ফরেস্টের গোলকিপার হ্যান্ডারসন। একের পর এক অতিমানবিয় সেইভে তিনি শুধু সালাহ-ফিরমিনোদের হতাশই করেননি, জিতেছেন নটিংহ্যাম ফরেস্টের ভক্তদের হৃদয়।
গত মৌসুমে সবমিলিয়ে ২২ পয়েন্ট হারানো লিভারপুল এই মৌসুমে ইতিমধ্যে হারিয়ে ফেলেছে ১৭ পয়েন্ট। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের মাঠে একটি ম্যাচও জেতেনি লিভারপুল! নটিংহ্যাম ফরেস্ট এই জয়ে এক ধাপ এগিয়ে ২০ থেকে ১৯ নম্বরে উঠে এসেছে, অন্যদিকে লিভারপুল রয়েছে ৭ নম্বরে। যদিও এই সপ্তাহের অন্যান্য দলের ম্যাচের পর লিভারপুলের অবস্থানের আরো অবনতি হতে পারে। ইতিমধ্যেই লিগ শিরোপার লড়াইয়ে নিজেদের সুযোগ নেই বলে ঘোষণা দেওয়া লিভারপুল বস ক্লপের জন্য এখন আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লীগের টিকিট কাটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। এতো হতাশার মাঝে লিভারপুল ভক্তরা নিজেদের স্বান্তনা দিয়ে বলতেই পারে, “আমরা শহরকে (ম্যানসিটি) ধ্বংস করে এবং জঙ্গলকে (নটিংহ্যাম ফরেস্ট) রক্ষা করে পরিবেশবান্ধব পৃথিবী গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।”